সম্প্রতি সৌদি ও পাকিস্তান একটা যুগান্তকারী “স্ট্র্যাটেজিক মিউচুয়াল ডিফেন্স এগ্রিমেন্ট” চুক্তি করেছে, এটা অনেকটা NATO এর ৫ম আর্টিক্যালের ম...
সম্প্রতি সৌদি ও পাকিস্তান একটা যুগান্তকারী “স্ট্র্যাটেজিক মিউচুয়াল ডিফেন্স এগ্রিমেন্ট” চুক্তি করেছে, এটা অনেকটা NATO এর ৫ম আর্টিক্যালের মত।
এখানে আছে-
এই দুই দেশের একটার উপর আক্রমণ হলে অন্যটার উপর আক্রমণ হয়েছে ধরে নিয়ে যৌথভাবে পদক্ষেপ নিবে!
বুঝা গেল ব্যাপারটা?
সৌদির নিয়ার ফিউচারে পারমাণবিক বোমা বানানোর সম্ভাবনা নাই এটা তারা বুঝতেছে, এবং তারা এইটাও বুঝতেছে যে- আমেরিকার কন্ট্রোলে ইসরায়েল নাই। সৌদি তাই দ্রুত পাকিস্তানের পারমাণবিক বোমার উপর ভরসা রেখে ফেলেছে, এমন একটা চুক্তি যে সৌদি পাকিস্তান করবে এইটার অভাস পাওয়াও যায়নি।
যুক্ত হোন আন্তর্জাতিক রাজনীতির টেলিগ্রাম চ্যানেলে- https://t.me/irp2023
যুক্ত হোন আন্তর্জাতিক রাজনীতির ইউটিউব চ্যানেলে- https://youtu.be/eNcH58CZnB0
এইটার একটা বিশাল ইম্পেক্ট পড়বে মিডেল ইস্টে।
যেমন ধরেন-
সম্প্রতি ন্যাটোর মত একটা যৌথ সামরিক সংগঠন বানাতে কাজ করছে মিডেল ইস্টের নেতারা। খুব স্বাভাবিকভাবেই, এই কার্যক্রম আগানো মাত্রই ইসরায়েল আরবে হামলা চালায়া দিবে এইটা সৌদি জানে। সে হামলায় পশ্চিমারাও মদদ দিবে।
তাই সৌদি আগেই পাকিস্তানের সাথে এমন চুক্তি করলো যেটা ইসরায়েলকে সৌদি আক্রমণ থেকে বিরত রাখবে। এই চুক্তি শুধু ইসরায়েলের বেলায় খাটাবে, সৌদিতে হুথির আক্রমণ এসবে কার্যকর করবে না।
এর পাশাপাশি এখন UAE, ওমান, কুয়েত, কাতার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগে সৌদি পাকিস্তান ডিলে এড হতে চাইবে, বা তুরস্ক, রাশিয়া মুখি হবে।
বিশ্বের পরিস্থিতি দ্রুত তালগোল পাঁকাচ্ছে,
যে কারো একটা ভুল বিশ্বযুদ্ধ শুরু করে দিতে পারে।৷
তবে বলতেই হয়, সালমান একটা অসাধারণ চাল দিয়েছে। এখন মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমাদের প্রতিক্রিয়ায় অপেক্ষা।
সৌদি আরব ও পাকিস্তানের এই “স্ট্র্যাটেজিক মিউচুয়াল ডিফেন্স এগ্রিমেন্ট” থেকে কী প্রভাব পড়তে পারে —
ক্রিয়াশীল দিকগুলো
1. নিরাপত্তার সম্মিলিত বন্ধন বাড়বে
- দুই দেশই সংরক্ষণ করতে চায় যে “যেকোনো আগ্রাসন/আক্রমণ একটিমাত্র প্রতি” হোক, সেটা দুই দেশের প্রতি হুমকি হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
- এইভাবে, পাকিস্তান সৌদির নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্ব নিতে পারবে এবং সৌদি আরব কিছু ‘গ্যারান্টি’ অনুভব করতে পারবে।
2. রাজনৈতিক প্রভাব ও কূটনৈতিক দক্ষতা
- সৌদি আরবকে মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টির উপর আংশিকভাবে নির্ভরশীল হতে হয়নি এমন একটা বিকল্প দেখা দিতে পারে।
- পাকিস্তানের মধ্যে এটা একটি ব্যানার হয়ে দাঁড়াতে পারে যে তারা শুধুমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার আরেকটা দেশ নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে (West Asia) নিরাপত্তা রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এক অংশীদার।
3. অর্থনৈতিক ও উপকৃতিক দিক
- পাকিস্তান বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে চাপে আছে। এই ধরনের চুক্তি সৌদি আরব থেকে আর্থিক সহযোগীতা, সহায়তা, বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করতে পারে।
- সৌদির জন্যো এটা একটি নিরাপত্তামূলক “বিকল্প” বিনিয়োগ — অর্থনৈতিক ও সামরিক বন্ধুবান্ধব সম্পর্ক সবদিক থেকে রক্ষা করার জন্য।
4. নিয়ন্ত্রণ ও নিরাশ্রয়তা বাড়ানো
- এই চুক্তি সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মাঝে নির্ধারিত রণনৈতিক দক্ষতা, অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর বিনিময়, যৌথ মহড়াসহ মিলিত প্রস্তুতির দিক থেকে বাড়তে পারে।
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাব্য নেতিবাচক দিক
1. অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও পারমাণবিক হুমকির সম্ভাবনা
- যদিও চুক্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি যে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র সৌদি আরবকে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে, তবে “সাম্প্রতিক বিবৃতি” থেকে কিছু এধরনের ব্যাখ্যা বাড়ছে।
- এই ধরনের সম্ভাবনা পাশ্চাত্য রাষ্ট্র, পার্শ্ববর্তী দেশ ও আন্তর্জাতিক মনিটরিং সংস্থাগুলোর নজর কাড়বে এবং পারমাণবিক ব্যালেন্স বা প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া ত্বরান্বিত হতে পারে।
2. ভারত ও অন্য পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া
- ভারতের উদ্বেগ ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। ভারত আশা করছে সৌদি আরব “সকল পারস্পরিক মওকুফ” সম্পর্ক বিবেচনায় রাখবে এবং এ ধরনের চুক্তি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তায় কী প্রভাব ফেলতে পারে সেটি খুঁটিনাটি ভাবে ভাবতে হবে।
- এছাড়া, ইরান ও অন্য দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া হতে পারে — তারা এই চুক্তিকে তাঁর সঙ্কেত হিসেবে দেখবে যে সৌদি- পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, যা তাদের নিরাপত্তা প্রেক্ষাপটে উদ্বেগ বাড়াতে পারে।
3. প্রয়োগযোগ্যতা ও বাস্তব বাধাসমূহ
- চুক্তিতে “যেকোনো আগ্রাসন” কে কীভাবে সংজ্ঞায়িত হবে, এবং কে কখন ও কীভাবে “উত্তর দেয়” — এসব ক্ষেত্রে স্পষ্টতা ও বাস্তব প্রস্তুতির অভাব থাকতে পারে।
- আরেকটি হলো অর্থনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতা — পাকিস্তানের জন্য সৌদি আরবকে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করার ক্ষেত্রে সময়ে, টেকসই ও সক্ষম হতে হবে।
4. আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও সম্পর্ক জটিলতা
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো মেম্বার দেশ, এবং অন্যান্য বড় শক্তি যেমন চীন, রাশিয়া ইত্যাদির সাথে সৌদি ও পাকিস্তানের সম্পর্কগুলোর দিক পরিবর্তন হতে পারে।
- এই চুক্তি যদি কখনো আগ্রাসন সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক দলের দৃষ্টিভঙ্গা ও পার্লামেন্টারি/আইনগত বাধ্যবাধকতা বিবেচনায় আনা হবে।
সামগ্রিক ব্যতিক্রম ও দীর্ঘমেয়াদে সম্ভাবনা
পরিমিতভাবে ব্যালান্সড ক্ষমতা শিফট** হতে পারে: মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্য, বিশেষ করে সৌদি আরব ও ইরান-এর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, পরিবর্তিত হতে পারে।
নিত্য নতুন যৌথ উদ্যোগ** এর সুযোগ পাওয়া যাবে — মিলিত সামরিক মহড়া, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, গোয়েন্দা ও নজরদারি কাজ, সীমান্ত সুরক্ষা ইত্যাদিতে কমন প্রজেক্ট হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তার গ্যারান্টি** সৌদি আরব পাবলিকভাবে বলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর তার আস্থা কমে এসেছে; তাই পাকিস্তানকে একটি বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে।
No comments