তীব্র গরমে অনিমেষের ঘুম ভেঙে গেল। কয়েক সেকেন্ডের জন্যে অতন্দ্রিলার সাথে ধোঁয়া উঠা গরম চায়ে চুমুক দেওয়া হল না। ঘুম ভাঙার পর পুরোপুরি বাস্তব...
তীব্র গরমে অনিমেষের ঘুম ভেঙে গেল। কয়েক সেকেন্ডের জন্যে অতন্দ্রিলার সাথে ধোঁয়া উঠা গরম চায়ে চুমুক দেওয়া হল না।
ঘুম ভাঙার পর পুরোপুরি বাস্তবে ফিরতে অনিমেষের কিছুটা সময় লাগে। সাধারণত এই সময়টা সে চোখ বন্ধ করেই কাটায়, আজ সে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রতিনিয়ত একই দিক থেকে পাখা গুলো ঘুরেই চলছে। মিনিটে কতবার পাখাগুলো ঘুরে ? ১০০?১০০০?২০০০?
সাধারণত ১০০ এর সাথে ২০০ নিয়ে বিবাদ বাধে, তাইলে বলে ১০০ এর সাথে ২০০০?
অনিমেষ স্থির দৃষ্টিতে ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে। কী দ্রুত গতিতে ছুটছে! এভাবে কিছুক্ষণ ছুটলে হয়ত অতন্দ্রিলার কাছে পৌঁছে যাওয়া যেত!
গতির এই তীব্রতা সত্ত্বেও গরম লাগছে। অনিমেষ ফ্যানের দিকে তাকিয়ে ভাবছে, অথচ কয়েক মাস আগেই এই ফ্যান পরম জড়ের মত নির্জীব ছিল। মোটা ভারি সোয়েটার এর সাথে কম্বল ছিল সঙ্গী। বাহিরে বের হলে মনে হত লম্বা কোন বাঁশ দিয়ে সূর্যের সামনের কুয়াশা গুলো সরিয়ে দিই!
কেমন অবিশ্বাস্য ব্যাপার!
দু'মাসেই এত অবিশ্বাস্য ব্যাপার!
মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে কোন ম্যাসেজ নেই,
কী অবিশ্বাস্য! অথচ আগে এই যন্ত্রটার কোন বিশ্রাম ছিল না!
পরিচিত রাস্তায় কতকাল হাটা হয় না, দীর্ঘকাল কোন পদাঙ্ক নেই! কী অবিশ্বাস্য!
অনিমেষের মাঝেমধ্যে কিছুই বিশ্বাস হয় না! ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে পরিবর্তন দেখে, আর ভাবে ঘুম ভেঙে আবার ধোঁয়া উড়া চায়ে চুমুক দিয়ে পাতা ঝরা শীতে একসাথে হাটবে।
প্রায়শই অনিমেষ খেই হারিয়ে ফেলে, সময় বুঝতে পারে না।
আচ্ছা পড়ন্ত বিকেলের আড্ডাটা কি সে দিয়েছিল নাকি কোন উপন্যাসে পড়া?
অতন্দ্রিলা বলতে কি আসলেই কেউ ছিল? নাকি মস্তিষ্কে জট পাঁকানো নিউরনের ভ্রম?
চুড়ির টুংটাং আওয়াজ, ছিঁড়ে যাওয়া পায়েল, ভ্যাপসা দুপুর, খোলা চুলের সময় গুলো কি বাস্তবে ছিল? নাকি স্বপ্ন? গল্পের প্লট?
অনিমেষ কী এখনো ঘুমাচ্ছে? নাকি সে এখনো জন্মায়নি?
অনিমেষ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ফ্যান দেখে আর ভাবে, আবার ঘুমিয়ে চা টা শেষ করা যায়।
No comments