যুদ্ধাহত পোড়া বীভৎস হৃদপিণ্ড নিয়ে যখন তোমার বাসার দিকে ছুটছি, তখন ভর সন্ধ্যা। বিশাল বড় সূর্যটা টকটকে লাল আর কালচে হচ্ছে জমে যাওয়া রক্তের ম...
যুদ্ধাহত পোড়া বীভৎস হৃদপিণ্ড নিয়ে যখন তোমার বাসার দিকে ছুটছি, তখন ভর সন্ধ্যা। বিশাল বড় সূর্যটা টকটকে লাল আর কালচে হচ্ছে জমে যাওয়া রক্তের মত।
তোমার বাড়ির পথটা পশ্চিমমুখী। প্রায়শ বিকেলে যখন পথ মাপি, চারপাশ কেমন অদ্ভুত মনে হয়।
চারপাশে নানাবিধ বাহনের কান ফাটানো হুংকার, মানুষের স্রোত, বুকে শোক, মাথার উপর অস্তমান সূর্য আর সামনে লম্বা পথ।
এই পথের শেষে কয়েকশ কদম ফেললেই তোমার বাড়ির আঙিনা, সে অব্দি পা মাড়ানোর সাহস হয়নি কখনো। মোড়ের দোকানে চা কিংবা বড়জোর তোমার বাড়িকে কেন্দ্র ধরে 'নিরাপদ দূরত্ব' বজায় রেখে পরিধি বরাবর চক্কর দেওয়া। এ-ই সই!
এই ব্যাস-ই আমার তোমার মাঝে সবচেয়ে কম দূরত্ব!
ভাবা যায়?!
কী তীব্র দহন বুকে নিয়ে,
বুকপকেটে ভালবাসা চেপে,
প্রায় রোজ এক রাস্তায় আনাগোনা!
অথচ পা বাড়ালেই তোমার দেখা,
চোখ তুললেই তুমিই সই,
কান পাতলেই সেই প্রিয় স্বর!
আমাদের নিরবচ্ছিন্ন বিরতি সরল রেখার দূরত্ব মেনে চলে,
আর আমি তুমি সমান্তরালে।
মাঝেমধ্যে মনে হয়, আমরা সবাই লেঞ্জের সূত্র মেনে চলি,
"কাছে গেলে ভাবি, দূরে যাওয়াই শ্রেয়,
দূরে এসে ভাবি, কেমনে বাঁচি প্রিয়!"
সূর্যাস্ত একটা বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে মানুষের মাঝে,
মানুষ সূর্যাস্তের পরপরই কিঞ্চিৎ অনিরাপদ বোধ করে, তখন ঘর খুঁজে, মানুষ খুঁজে।
তোমার বাড়ির পাশের বিশাল সূর্যের ক্রমাগত প্রস্থানে আমারো কিঞ্চিৎ চারপাশে তাকিয়ে খেয়াল হয়, 'কিছু মানুষই ঘর'! অবশ্য সবার ঘর থাকে না। কিছু মানুষ ভবঘুরে ঘুরে বেড়ায় সারাদিন, সন্ধ্যা নামলেই হাহুতাশ বাড়ে!
অগণিত মানুষ চারপাশে থাকলেও তীব্র একাকীত্ব ভর করে, কেউ হাতে হাত রাখলেও মাঝেমধ্যেই লাগে, 'এ এক অন্য মানুষ'!
তোমার বাসা অব্দি যত দ্রুত যাওয়া যায়, যতদ্রুত ফিরে আসা যায় না।
No comments