[এটা কোন মুভি রিভিউ না। শিল্প আমি ভাল বুঝি না খুব একটা। মুভির প্লট বা কোন সিন ভাল লাগলে সেটার বিশ্লেষণ করার চেষ্টা মাত্র। আবার লক ডা...
[এটা কোন মুভি রিভিউ না। শিল্প আমি ভাল বুঝি না খুব একটা। মুভির প্লট বা কোন সিন ভাল লাগলে সেটার বিশ্লেষণ করার চেষ্টা মাত্র। আবার লক ডাউনে আপাতত বেকার তাই এসব ছাইপাঁশ লেখা, না পড়ে চলে যেতে পারেন।]
কে কেমন অভিনয় করেছে, বা কার চরিত্র কতটুকু স্টাব্লিশড হয়েছে এসব খুব জটিল ব্যাপার মনে হয় আমার। এদিকে ভুলেও ঢুকার ইচ্ছা নাই। যতদূর জানি এটায় শেক্সপিয়রের দুটা ড্রামা থেকে প্লট নেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত বুঝতে সে দুটা পড়তে পারেন। মজা পাবেন।
সে যাক,
ছোট করে মুভিতে আসি,
বন্দরনগরী কেন্দ্রীক একটা সিন্ডিকেট দাঁড়ায়। তারা সম লেভেলে থাকে সবাই। কেউ একা বড় হয়ে গেলে তাকে ভ্যানিশ করে ফেলে অন্যরা। এই পলিসিতেই চলে তা
রা। ঘটনা ক্রমে জুলফিকারের বেলায় একটু ঝামেলা হয়ে যায়।
জুলফিকারকে মারার পর গেঞ্জাম লেগে যায়। তার পক্ষের মানুষ যারা জুলফিকারকে মারে তাদের হান্ট করে। আপাতত এটুকু থাক।
এবার একটু থিউরি অফ গ্রুপ জেনে আসি।
মানুষের মধ্যে গ্রুপিং করার কনসেপ্ট আসে মূলত নিজেকে রক্ষা করার তাগিদে। আগে সবাই প্রায় সেপারেট থাকতো। তখন তারা বুঝতে পারে, একা প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকার সম্ভাবনা কম। তাই তারা একত্রিত হতে শুরু করে।
অনেকজন মিলে থাকার পর কিছু সমস্যা দেখা দেয়। যেমন:
১। সিদ্ধান্ত কে নিবে?/ নেতৃত্ব কে দিবে?
২। কে কতটুকু কন্ট্রিবিউশান রাখবে? ইত্যাদি
তখনি নেতৃত্বের প্রচলন শুরু হয়। অবশ্য এটাও অনেকটা পশুদের থেকেই শেখা। যেমন:
পশুপাখি অধিকাংশ সবাই দলবেঁধে চলে।
একটা বা দুটা পশু পালকে নেতৃত্ব দেয়,
শাসন করে বা দল থেকে বের করে দেয়,
এমন কি পশুরা নিজের জন্যে থ্রেট মনে করলে নিজের পালের অন্য পশুকে মেরে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করে না।
মানুষ যেহেতু অনুকরণীয় প্রাণি, আমার আপনার অনেক কিছুই পশু পাখি থেকেই এডাপ্ট করা। একটু ভেবে দেখেন।
সে যাক,
মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় দল গঠন করলেও তারা বুঝতে পারে দল গঠন করলে নিজেকে যেমন নিরাপদ করা যায়, অন্যদের শোষণও করা যায়।
এটা অনেক বড় একটা রিয়েলাইজেশন। ভয়াবহ রিয়েলাইজেশন।
বড় বড় আধুনিক রাষ্ট্র গুলোর সোশ্যাল সিকিউরিটি অনেক বেশি। তাও তারা দল গঠন করে কেন?
সে যাক,
আধুনিক যুগে বেশিরভাগ দল বা সিন্ডিকেট গঠন করাই হয় ডোমিনেট করার জন্যে, কিংবা শোষণ করার জন্যে। যদিও তারা এটাকে খারাপ হিসেবে দেখে কিনা এটা একটা বড় সংকট।
সে যাক,
প্রতিটা দলের কোন না কোন লক্ষ্য থাকা লাগবে। যুদ্ধের জন্যে প্রতিপক্ষ লাগবে।
কিন্তু যখন সব প্রতিপক্ষ মারা যায় তখন কি হয়?
জুলফিকার মুভিটায় আসি। তাদের সিন্ডিকেট এত শক্তিশালী ছিল যে অন্য কোন প্রতিপক্ষ দাঁড়াতেই পারে নাই।
তারপরে কি হল? প্রতিপক্ষ তো লাগবেই!
তখনি শুরু হয়, নিজেদের নিজেদেরকেই প্রতিপক্ষ বানানো।
কিভাবে বানাবে এটার নানান ফাংশানাল এরিয়া থাকতে পারে। জুলফিকারে ছিল সিন্ডিকেটের চেয়ে বড় হওয়া যাবে না, অন্যখানে হয়ত সুনাম বাড়া যাবে না, বা টাকা বাড়া যাবে না বা অন্যান্য।
এটার সাথে আমাদের রক্তে থাকা শ্বেতরক্তকণিকার একটা মিল আছে।
শ্বেতরক্তকণিকা শরীরের প্রবেশ করা অবাঞ্চিত জীবাণু মেরে ফেলে। যখন জীবাণু থাকে না বা শ্বেতরক্তকণিকা বেশি উৎপাদিত হয় তখন সে দেহকে ক্ষতি করা শুরু করে!
অর্থাৎ,
যারা সিন্ডিকেট করেন বা দল করেন প্রভাব বিস্তার করার,
তারা ম্যাচিউরিটিতে পৌঁছুলেই নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে যায়। এটা একটু ভয়াবহ ব্যাপার। কারণ শত্রুরাও এত ভাল জানে না বুঝে-না যতটা আপনার গ্রুপের মানুষরা আপনাকে বুঝে।
এরপর আসা যাক জুলফিকারের পরের অংশে,
জুলফিকার হত্যার পর ওর অংশের সবাই অন্যদের হান্ট করে। এরপর জুলফিকারের রিলেটিভ নিজের দলের সবাইকেই মারা শুরু করে!
এটা মজার একটা পয়েন্ট।
প্রতিটা দলের একজন না একজন ব্যাপারটা বুঝতে পারে,
দল বা সিন্ডিকেট কিভাবে অপারেট করে!
উচ্চাকাঙ্খী হোক কিংবা বুদ্ধিমান কিংবা সিকিউরিটি কনসার্ন যা-ই বলা হোক না কেন,
সে বুঝতে পারে, তারা সবাই যেমন অন্যদের মেরে আসছে। এভাবে কয়েক বছর পর নিজেদের মধ্যেও শুরু হবে!
এটা একটা বড় কঠিন বাস্তবতা।
যদিও প্রথমে সবাই ভাবে আমরা আলাদা, আমাদের এমন হবে না, এসব আসলে ওয়ার্ক আউট করে না।
এটা সম্ভব হলে কখনোই নতুন দল বা সিন্ডিকেট বানানো সম্ভব হত না। একটা না ভাঙলে নতুন হওয়ার স্পেস পাওয়া যায় না!
যাইহোক,
জুলফিকার মুভির একটা সিন আমার পছন্দের,
জুলফিকারকে মারার জন্যে সবাই গুলি করে কিন্তু জুলফিকার দাঁড়িয়ে থাকে,
কিন্তু যখন জুলফিকারের ক্লোজ ফ্রেন্ড গুলি করে তারপর সে পরে যায়।
[যদিও ৫/৬টা গুলি লাগার পরেও কেম্নে দাঁড়ায়া ছিল সেটা একটা ব্যাপার, এসব থাকেই মুভিতে!]
তার পড়ে যাওয়াটা যতটা না গুলির জন্যে ছিল,
তার বেশি ছিল কে গুলি করেছে সেটা।
তো, এই মানুষগুলোর কাছ থেকে হওয়া ভিট্রেয়ালটা সহ্য করতে পারবেন তো?
বি.দ্র.:
এটা ব্যক্তিগত অবজারভেশন। কারো পছন্দ নাও হতে পারে।
আবার হয়ত অন্য কোনটা নিয়ে লিখবো ইচ্ছা হলে।
No comments