Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Pages

Recent Writings

{latest}

চাতক পাখি - রাফিউ আহমেদ

  - পাখি হওয়া গেলে কী হতে?  - পাখি? চাতক সম্ভবত!     পাশের কুকুরের ডাকে সন্ধ্যার আভাস পাওয়া যায়। আজকাল কখন ভোর হয়ে রাত নামে ঠাহর করতে পারি ন...

 


- পাখি হওয়া গেলে কী হতে? 

- পাখি? চাতক সম্ভবত!  

 

পাশের কুকুরের ডাকে সন্ধ্যার আভাস পাওয়া যায়। আজকাল কখন ভোর হয়ে রাত নামে ঠাহর করতে পারি না।   

প্রতিদিন সবই করি, এদিকওদিক হাটাহাটি, বই খুলে পৃষ্ঠা উলটানো, আকাশ দেখা, আরো কত কী!  

তবে সমস্যা হয়ে যায়, বিরাট সমস্যা হয়ে যায়।  যা-ই করি না কেন, কিছুক্ষণ পর চোখ ঘোলা হয়ে যায়। ঠিক 'ফোকাস' করতে পারে না চোখ। শুরুতে ভাবলাম বোধহয় চোখের সমস্যা। সমস্যার তো আর অভাব নাই, টাকার সমস্যা, কারো খাওয়ার সমস্যা, কেউ কেউ নিজেই সমস্যা। সমস্যা ভাবলেও শুরুতে গুরুত্ব দেই নাই। আমার এই শুরুতে গুরুত্ব না দেওয়ার বাজে স্বভাব আর পাল্টালো না।  

দিন দিন সমস্যাটা গুরুতর হল। দু'এক মিনিট পরেই আমি ফোকাস করতে পারি না, চোখ ঘোলা হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে ইচ্ছা হত ডিএসএলআর ক্যামেরার মত অটো ফোকাস বাদ দিয়ে ম্যানুয়াল ফোকাস করি। হয় না।  শেষমেশ অনিমেষ টেনে- হিঁচড়ে ডাক্তারে কাছে নিয়ে গেল। ডাক্তার মশাই গম্ভীর মানুষ।  কি কি যন্ত্রপাতি দিয়ে এদিকওদিক দেখে মোটা ভারি চশমার ফাঁক দিয়ে বললেন,"চোখ তো ঠিকই আছে, আপনি একটু বেশি ঘুমাবেন কয়েকদিন, ঠিক হয়ে যাবে।"  

সেই থেকেই এই আমার রোগ। শুরুতে বুঝতে পারি নাই, ডাক্তারো ধরতে পারে নাই কারণ; আমিও কাউকে বলি নাই। আমার এই তোমারে দেখার রোগ। তোমারে  বেশিদিন না দেখলে চোখ আর কিছু দেখতে চায় না।  

 

কী এক ভয়াবহ রোগ বাঁধায়া ফেললাম বলো!  অনেকের নানান সমস্যা। আমার এতশত সমস্যা নাই। আমার একটাই সমস্যা, "তুমি নাই" সমস্যা।  

ভাদ্রে যখন শেষবার আমরা একসাথে হেসেছিলাম, অদ্ভুতভাবে অসময়ে হলেও, সেটাই ছিল আমার শেষ বসন্ত। তারপর আর টের পাই না, কখন বসন্ত আসে যায়,  কখন দিন আসে যায়। 

 তোমার বাড়ির পেছনের চা ওয়ালা ভালই চা বানায়, চিনি কম দেয়, লিকার গাঢ় হয়। তুমি বোধহয় জানো না। না জানাটাই স্বাভাবিক। ওদিকটায় তোমার কখনো কাজ ছিল না। আমারো অবশ্য নাই, তবুও জানি।   

 

আমি পাখি হলে চাকত হতাম সম্ভবত। 

বুভুক্ষের মত চোখ ফেটে চৌচির, 

কই কিছুতেই তো তৃষ্ণা মিটে না।

No comments